• শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৫ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

টাইম ট্রাভেল কি করা সম্ভব?

নিউজ ডেস্ক

দৈনিক ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০১৮  

আজ আমরা বিজ্ঞানের বেশ মজাদার একটি টপিক নিয়ে আলোচনা করব। বিজ্ঞানের বড় বড় প্রশ্নের মধ্যে একটি হচ্ছে টাইম ট্রাভেল। টাইম ট্রাভেল কি করা সম্ভব? না কি সম্ভব নয়? এটা নিয়ে বিজ্ঞানিদের মধ্যে মতভেদ আছে। কিছু বিজ্ঞানীর মতে টাইম ট্রাভেল করে ভবিষ্যতে যাওয়া সম্ভব হলে অতীতে যাওয়া সম্ভব নয়। আর বিজ্ঞানের এই সমস্ত থিওরির সাথে একমত পোষণ করেন প্রয়াত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। টাইম ট্রাভেল কি? আর কি কি উপায়ে টাইম ট্রাভেল করা সম্ভব? আর আমরা কি অতীতকালে যেতে পারবো টাইম ট্রাভেলের মাধ্যমে? সেই সমস্ত বিষয় নিয়েই ডেইলি বাংলাদেশের আজকের এই আয়োজন।

আজকে আমরা জানব স্টিফেন হকিং এর কল্পনার মহাকাশ যান সম্পর্কে। যার সাহায্যে মানুষ আমাদের গ্যালাক্সির শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যেতে সক্ষম হবে। তবে আসুন আমরা জানি সেই মহাকাশ যানের সম্পর্কে যার দ্বারা ভবিষ্যতে মানুষ টাইম ট্রাভেল করতে পারবে। মানব দ্বারা তৈরি করার সবথেকে দ্রুতগতির মহাকাশযান অ্যাপলো ১০, যার সাহায্যে মানুষ চাঁদে যেতে সফল হয়েছিল। ২৬ মে ১৯৬৯ সালে চাঁদ থেকে ফেরার পথে অ্যাপলো ১০ এর স্পীড প্রায় ৪০ হাজার কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা ছিল। যার মধ্যে তিনজন মহাকাশচারী ছিল। তবে এটা ঠিক যে বর্তমানে এর থেকে অধিক স্পিডের মহাকাশ যান তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সে সমস্ত মহাকাশ যানেকেও এখনও পর্যন্ত ভ্রমন করতে পারেনি। যদি আমাদের টাইম ট্রাভেল করতে হয় তাহলে আমাদের অ্যাপলো ১০ এর থেকেও দুই হাজার গুন অধিক গতির প্রয়োজন হবে।

আর এটা করার জন্য আমাদের একটি বিশাল এবং ভারী স্পেস শিপের প্রয়োজন হবে। এই মহাকাশ যান এতটা বড় হতে হবে যে যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জ্বালানী রাখা যাবে এবং ওই মহাকাশ যানে এতটা পরিমানে জ্বালানী রাখতে হবে যেন ওইটা প্রায় লাইটের স্পিডের কাছে পৌঁছাতে পারে। লাইটের স্পীডের আশেপাশে যেতেই মহাকাশযানকে ছয় বছর সময় লাগবে। এই যানটি ভীষণ ভারী হবে। যার কারণে সময়ের সাথে সাথে এটার গতি বৃদ্ধি পাবে আর অল্প সময়ের মধ্যেই বড় বড় দূরত্ব সে পাড়ি দিতে সক্ষম হবে। মাত্র এক সপ্তার মধ্যেই এটা আমাদের বাইরের গ্রহ নেপচুন পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। আর দুই বছরের মধ্যে এই মহাকাশ যানটি লাইটের স্পিডের ৫০ ভাগ কাছে পৌঁছে যাবে এবং ওই সময় এটা আমাদের সৌরমণ্ডলেরও বাইরে চলে যাবে।

এর থেকেও দুই বছর পরে এর গতি আলোর গতির ৯০ ভাগ পর্যন্ত যেতে সক্ষম হবে। আর ওই সময় সেটা আমাদের সৌরমণ্ডলের সব থেকে কাছের তারা মন্ডল আলফা সেঞ্চুরিকে পার করে যাবে। পৃথিবী থেকে প্রায় ৩০ ট্রিলিয়ান মাইল, মানে প্রায় চার বছর পর এই মহাকাশযানটি সময় যাত্রা মানে টাইম ট্রাভেল করতে শুরু করবে। এই মহাকাশযানে কাটানো এক ঘন্টা পৃথিবীর প্রায় দুই ঘন্টার সমান হবে। তখন ওই যানের সিচুয়েশন ব্ল্যাক হোল এর সমান হবে। মত হবে কিন্তু এখনও অনেক কিছুই বাকি আছে। এরপর দুই বছর পর্যন্ত আরো এনার্জি শেষ করার পর আরও অধিক দ্রুতগতিতে ট্রাভেল করতে থাকবে।

ওই সময়ে এই মহাকাশযানটির স্পীড প্রায় আলোর স্পীডের ৯৯ শতাংশ হবে। আমরা সবাই জানি লাইটের স্পীড ৩ লক্ষ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ডে হয়ে থাকে। এতটা স্পিডে এই মহাকাশযানে কাটানো একদিন পৃথিবীর এক বছরের সমান হবে। আর তখন আমাদের মহাকাশ যান ভবিষ্যতে ট্রাভেল করতে থাকবে। সময়ের এই গতি কম হওয়ার জন্য একটি লাভ আমাদের অবশ্যই হবে। আমরা আমাদের জীবনের একটি বিশাল দূরত্বকে পাড়ি দিতে সক্ষম হব। যার সাহায্যে মানুষ আমাদের গ্যালাক্সির শেষ সীমা পর্যন্ত যেতে সক্ষম হবে।

এর মানে আমরা আমাদের গ্যালাক্সির শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যেতে মাত্র ৮০ বছর সময় লাগবে। স্টিফেন হকিং এর মতে আমাদের এই ভ্রমনের মূল উদ্দেশ্য এটাই হবে আমরা গ্যালাক্সির শেষ সীমা পর্যন্ত যেতে পারব এবং আমরা আমাদের গ্যালাক্সির সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে পারবো। আমাদের এই ইউনিভার্স যেখানে সময় একেক জায়গায় একেক গতিতে চলছে।

যেখানে বিশাল আকারের বস্তু ব্ল্যাক হোল স্পেস এবং টাইমকে প্রভাবিত করে। এই ব্রহ্মাণ্ড একটি এমন জায়গা যেখানে আমাদের চারিদিকে অনেক ছোট ছোট ওয়ার্ম হল মজুদ আছে। যদি আমরা আমাদের ল অফ ফিজিক্স এর ব্যবহার করে একদম সঠিক টেকনোলজির মহাকাশযান তৈরি করতে পারি তবে সেটা আমাদের ফর্থ ডাইমেনশনে নিয়ে যেতে পারবে। আপনাদের কি মনে হয় স্টিফেন হকিং এর দেখা এই স্বপ্ন বাস্তবে কি রূপান্তরিত হতে পারবে? যদি তাই হয় তবে এমন যান তৈরি করতে কত সময় লাগতে পারে এটাই দেখার বিষয়।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –