• শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৪ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

হুয়াওয়ের বার্ষিক আয় কত!

দৈনিক ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০১৮  

সুলভ দামে পশ্চিমা ব্র‍্যান্ডগুলোর আদলে প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করে একসময় বাজার দখল করেছিলো চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু সেখান থেকে সরে এসে এখন তারা জোর দিচ্ছে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উপর। এজন্য তারা গবেষণা খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে।

চীনা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে গত ১ বছরে এক লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে শুধুমাত্র নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য। যাতে তারা মার্কিন প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংয়ের পাশাপাশি প্রযুক্তিপণ্য উদ্ভাবনে বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব দিতে পারে।

চীনের গুয়াংদুং প্রদেশের সবচেয়ে দক্ষিণের শহর শেনজেন। শহরের দুপাশে সুউচ্চ ভবনের সারি দেখলে মনে হবে না এর ইতিহাস মাত্র চার দশকের। যাত্রাটি শুরু হয়েছিলো ১৯৮০ সালে, শেনজেনকে চীনের‌ প্রথম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে অনুমোদন দেয়ার পর। চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর হিসেবে আবির্ভাবের মাধ্যমে শহরটি পরিচিত হয়েছে বিশ্বব্যাপী। এদের মধ্যে অন্যতম হুয়াওয়ের প্রধান সদর দপ্তর। প্রায় ৫০০ একর জায়গার মধ্যে অবস্থিত এই সদর দপ্তরটি।

 

1.হুয়াওয়ের বার্ষিক আয় কত!

১৯৭০ সালে মাত্র পাঁচ হাজার ছয়শ ডলার বিনিয়োগে যাত্রা শুরু করেছিলো হুয়াওয়ে। এখন তাদের বার্ষিক আয় ৯ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার বা ৭ লাখ ৭৫ কোটি টাকা। এই বার্ষিক আয়ে স্মার্টফোনের চেয়ে বেশি অবদান তাদের বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সলিউশনের। তাদের ডিভাইসের মধ্যে স্মার্টফোন, পিসি বা ট্যাবলেট-এর পাশাপাশি রয়েছে আইওটি বা ইন্টারনেট অফ থিংস। অন্যদিকে এন্টারপ্রাইজ বিজনেসের প্রসার এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার বা ডিভাইস তৈরি করে হুয়াওয়ে। এছাড়া তাদের নিজস্ব ক্যারিয়ার বিজনেস গ্রুপ সারাবিশ্বে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ করছে। বর্তমানে হুয়াওয়ের বার্ষিক আয়ের একটি বড় অংশ এই গ্রুপ থেকেই আসছে।

বর্তমান বিশ্বে স্মার্টফোন মার্কেটের ১২.৩৭ শতাংশ দখল করে অ্যাপল ও স্যামসাং-এর পরের অবস্থানেই রয়েছে হুয়াওয়ে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে যে প্রতিষ্ঠানগুলো তার আগ্রভাগের দিকে রয়েছে হুয়াওয়ে। প্রায় ১৮৪ টি দেশে নিজেদের টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কিং সেবা পৌঁছে দিয়েছে হুয়াওয়ে।

 

2.হুয়াওয়ের বার্ষিক আয় কত!

প্রায় ১ হাজার উৎপাদন প্রতিষ্ঠানে এবং ১০ হাজার উৎপাদন লাইনে ব্যবহার হচ্ছে তাদের স্মার্ট কারখানা প্রযুক্তি। ১০০ সড়ক পরিবহন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এক লাখ বিশ হাজার কিলোমিটার রেললাইনকে তারা এনেছে ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায়। হুয়াওয়ের নিজস্ব স্মার্ট গ্রিড প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে ১৭০ টি বৈদ্যুতিক প্রতিষ্ঠান এবং ১ লাখ সাবস্টেশনে। ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক বিস্তারেও এগিয়ে আছে হুয়াওয়ে। এছাড়া ভবিষ্যৎ পৃথিবীর সাথে তাল মেলাতে সব কিছুতে প্রয়োগ হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার, যা তাদের তৈরি নিজস্ব স্মার্টফোনের ব্যবহৃত চিপসেটগুলোতেও দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি হুয়াওয়ের নতুন ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন‌ হুয়াওয়ে মেট টুয়েন্টি প্রো-তে তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন কিরিন ৯৮০ প্রসেসরটি ব্যবহার করেছে।

দ্রুত বদলে যাওয়া পৃথিবীর ভবিষ্যৎ দুনিয়ায় নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হুয়াওয়ে প্রতি বছরের আয়ের ১৫ ভাগ বিনিয়োগ করে থাকে গবেষণা খাতে। গত ১০ বছরে যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার। ১৪টি ব্যক্তিগত আরএনডি বা গবেষণা উন্নয়ন কেন্দ্র রয়েছে হুয়াওয়ের। যার মধ্যে সর্বশেষটি গড়ে তোলা হয়েছে সম্প্রতি সেনজেন এর কাছের শহর ডংগুয়ানে। যেটির আয়তন প্রায় ১৪ লাখ বর্গমিটার। এটি এতোটাই বিস্তৃত, এর ভেতর দিয়ে ৭.৮ কিলোমিটারের একটি রেল লাইন চলে।‌ ১২৫ টি কক্ষ বিশিষ্ট এই গবেষণাগারে প্রায় ২৫০০০ কর্মী কাজ করে। এর মধ্যে ২০০০ কর্মী স্থানান্তরিত হয়েছে সেনজেনের মূল ক্যাম্পাস থেকেই।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –