• মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৬ ১৪৩১

  • || ১৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

চূড়ান্ত আন্দোলন নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে অবিশ্বাস

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০২৩  

চলতি মাসের শেষদিকেই চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে চায় বিএনপি। দলটির নেতারা খুব দ্রুত কর্মসূচিও ঘোষণা করতে চান। এ আন্দোলন সর্বাত্মক হবে বলেও তারা মনে করছেন। এ নিয়ে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা দফায় দফায় বৈঠকও করছেন। সমমনা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলে তারা একযোগে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করতে চান। তবে প্রস্তুতিহীন এই আন্দোলন নিয়ে নিজেদের দল ও সমমনা অনেক দলের চাপে পড়েছেন বিএনপির নেতারা।

বিএনপির নেতারা বলছেন, সেপ্টেম্বর নয়, চলতি মাসের শেষেই তারা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে চান এবং এই আন্দোলন হবে সর্বাত্মক। এ ব্যাপারে ২২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপি আলাপ-আলোচনা করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, চূড়ান্ত আন্দোলন নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে অবিশ্বাস ও সন্দেহ রয়েছে। কারণ, এ আন্দোলন সফল না হলে বিএনপি যেমন অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। তেমনি জোটের ছোট ছোট দলগুলোও সমস্যায় পড়বে।

বিএনপির শক্তিশালী একটি পক্ষের ধারণা, এক দফা আন্দোলনের জন্য বিএনপি এখনো সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুত নয়। এরকম চূড়ান্ত আন্দোলন করার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি এবং পরিবেশ সৃষ্টি করা দরকার, সেই পরিস্থিতি বিএনপি এখন পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারেনি। কাজেই কোনোরকম প্রস্তুতি ছাড়াই চূড়ান্ত আন্দোলন হবে হঠকারিতা এবং এটি বিএনপিকে আরো বিপদে ফেলতে পারে।

বিএনপির অনেক নেতাই মনে করছেন, চূড়ান্ত আন্দোলন করলে বিএনপির অনেকেই বিশ্বাসঘাতকতা শুরু করবেন। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই এরই মধ্যে সরকারের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। 

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, দলের নেতারা যদি ঠিক না থাকেন তাহলে এ আন্দোলন করে কোনো লাভ হবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- চূড়ান্ত আন্দোলন নিয়ে বিএনপি নানারকম চাপের মধ্যে রয়েছে। এরকম চাপের মধ্যে থেকে কি আন্দোলন করা যায়?

বিএনপির অনেক নেতা মনে করছেন, পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও ইত্যাদির বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। আর সর্বাত্মক আন্দোলন করতে গেলে বিএনপিকে হরতালসহ অন্যান্য বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে। আর এরকম কর্মসূচি পালন করলে আন্তর্জাতিক মহলে বিএনপি আবারও সমালোচিত হতে পারে। দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক মহলে বিএনপি যে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিল সেটিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

বিএনপির একটি পক্ষ মনে করছে, দল এখনো সাংগঠনিকভাবে অনেক দুর্বল। এরকম পরিস্থিতে দুর্বল সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে যদি তারা কর্মসূচিতে নামে এবং বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি যদি আওয়ামী লীগ দেয়, সেক্ষেত্রে রাজনীতির মাঠে বিএনপি হেরে যাবে। তখন পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে যাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চূড়ান্ত আন্দোলনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো দল গোছানো এবং সরকারের ওপর পদ্ধতিগত চাপ সৃষ্টি করা। আর সেটি না করে হঠাৎ চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করলে তা হবে চরম হঠকারিতা।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –