• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইটভাটায় স্বর্ণের সন্ধান, কোদাল-খুন্তি হাতে সহস্রাধিক মানুষ

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২৪  

এক সময় কথিত ছিল জ্বীনের সোনার হাড়ি পেয়ে ভাগ্য পরিবর্তন। লাখ টাকার স্বপ্ন দেখে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে মাটি খুঁড়ে চলেছেন সহস্রাধিক মানুষ। ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইটভাটায় বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার মানুষ কেউ কোদাল, কেউ বাসিলা ও কেউ খুন্তি নিয়ে এসেছেন স্বর্ণের খোঁজে।

শিশু মহিলা থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা পর্যন্ত দলে দলে স্বর্ণ পাওয়ার সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়সম কাতিহার আরবিবি ইটভাটায় মাটির স্তূপগুলো স্বর্ণের মতোই জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। রাতের অন্ধকারে মানুষের হাতে থাকা টর্চ, মোবাইলের আলোতে ইটভাটার মাটির স্তূপ স্বর্ণালী রূপ ধারণ করেছে।

দূর থেকে যে কেউ দেখলেই গভীর অন্ধকারে টর্চের আলোয় আলোকিত স্বর্ণালী এক পাহাড়ের দৃশ্য দেখে চমকে উঠবে। মনে হবে বাংলাদেশের উত্তরের এ প্রত্যন্ত অঞ্চলে অলৌকিকভাবে কোনো সোনার পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে। হাজারো মানুষের বিশ্বাস আর আস্থা এখন কাতিহারের ইটভাটার মাটির স্তূপ। কেউ ভাগ্য বদলের আশায় আবার কেউ শখের বসে গভীর রাতে খুঁড়ে চলছেন এ অনাকাঙ্ক্ষিত স্বর্ণ।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইটভাটায় গত বেশ কিছুদিন ধরে চলছে মাটিতে স্বর্ণের খোঁজে খনন প্রতিযোগিতা। গ্রামের বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ বাড়ি হতে কোদাল-বসিলা নিয়ে ওই ভাটায় আসছেন দলেদলে। দেখা গেছে, এদের মধ্যে শ্রমিক শ্রেণির মানুষই বেশি। সোনা পেলে নিজেদের ভাগ্য বদল হবে এই আশায় কেউ বসে নেই। আশপাশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকেও ছোটখাটো যানবাহন নিয়ে স্বর্ণের সন্ধানে ভাগ্য বদলের জন্য ছুটে এসেছেন নানান পেশার মানুষ। আবার নিরাশ হয়েও ফিরছেন অনেকেই।

আশপাশজুড়ে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী খাবার দোকান। দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাটি খুঁড়ে বেশ কিছুদিন থেকেই অনেকে সোনা পাচ্ছেন। 

স্থানীয় লোকজনের দাবি, ওই ভাটার মাটির স্তূপে বেশ কিছুদিন থেকেই সোনা পাচ্ছেন লোকজন। এরমধ্যে অনেকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। সম্প্রতি সোনা বিক্রি করে অনেকেই মোটরসাইকেল কিনেছেন এমন কথাও অনেকের মুখে শোনা গেছে। কিন্তু কে কে সোনা পেয়েছেন এ কথা স্বীকার করছেন না কেউ।

তাদের দাবি, অনেকেই সোনা পেয়েছেন তবে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে পারেন এই ভয়ে মুখ খুলছেন না কেউ। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ছুটে আসা নারী-পুরুষদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। গভীর রাতে তাদের হাতে হাতে বাসিলা, সাবাল নিয়ে ঘেমে যাওয়া শরীরে ক্লান্তির ছোঁয়া। তারা জানান, অনেকে সোনা পাচ্ছে, তাই আমারাও খুঁড়ে দেখছি। চেষ্টা করতে দোষ কিসের।

আরবিবি ইটভাটার ব্যবস্থাপক লিটন আলী বলেন, কাতিহার সামরাই মন্দিরের পাশ থেকে মাটি খনন করে ইটভাটায় স্তূপ করা হয়েছে। গুজব উঠেছে ওই মাটির স্তূপ থেকে নাকি স্বর্ণের জিনিস পাওয়া গেছে। এরপর থেকেই সাধারণ মানুষ দিন-রাত ওই মাটির স্তূপ খনন করে স্বর্ণের সন্ধান করছে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –