• শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৬ ১৪৩১

  • || ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দুর্গা পূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত রাণীশংকৈলের কারিগররা

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ে ররাণীশংকৈল উপজেলায় মৃৎশিল্পীর কারিগরদের নিপূণ হাতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দূর্গা, লক্ষী, স্বরসতী, গণেশ ও কার্তিকের প্রতিমা। কোনো মন্ডপে চলছে অবকাঠামো তৈরি, কোথাও চলছে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ। আবার কোথাও বাকী রয়েছে শুধু রং করার কাজ। কে কত ভালো প্রতিমা তৈরি করে ভক্তদের হৃদয় ছুঁতে পারেন তারই প্রতিযোগিতা চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। সামর্থ্য অনুযায়ী স্থানীয় ও অন্য জেলা থেকে কারিগর এনে প্রতিমা তৈরি করাচ্ছেন পূজা কমিটির আয়োজকরা।

সরেজমিনে গিয়ে রাণীশংকৈল পৌরশহরের কলেজপাড়া, হাটখোলা, পিপুলতলা, ধামমন্দির, গোবিন্দ মন্দির, ঘুঘুডারা মন্দির, কাতিহারের শ্যামরায়, ভবানীপুর, নন্দুয়ার, কুমুরিয়া, বলিদ্বারা, কাশিপুর, নেকমরদ ও রাউতনগর মন্দিরসহ আরো অনেক মন্দিরে এসব দৃশ্য দেখা গেছে।

পূজার প্রায় এক মাস সময় থাকলেও যেনো দম ফেলার ফুসরত নেই রাণীশংকৈলের প্রতিমা তৈরির কারিগরদের। এরমধ্যে গত ৫ দিনের বৈরী আবহাওয়ার জন্য কিছুটা কাজের বেঘাত ঘটেছে বলে কারিগরা জানান। তারা জানান, এ বছর কাঠ, খড় ও মাটি ও রংয়ের দাম বেশি তাই প্রতিমা তৈরিতে খরচ বেশি হচ্ছে। আমাদের তেমন একটা লাভ থাকছে না। বাপ-দদার এ পেশাকে টিকিয়ে রাখার জন্য এই পেশা আমরা ছাড়তে পারছি না। 

অপরদিকে, দেবী দুর্গাকে ঢাঁক, ঢোল, উলু আর শঙ্খ ধ্বনিতে বরণ করতে অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছেন ভক্তকুল। অনেকেই এই উৎসবকে ঘিরে শুরু করেছেন কেনাকাটা।

উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন আকার, আর নানা সব কারুকাজে দেবী দুর্গার প্রতিমা বানানোর ব্যস্ততা। সকাল থেকে গভীর রাত র্পযন্ত কাঁদামাটি, খড়, বাঁশ এবং সুতলি দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। প্রতিমার র্পূণ রুপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা।

বেণীমাধব শীলের ফুলপঞ্জিকা অনুযায়ী, দুর্গাপূজো ২০২৩-এর নির্ঘণ্ট- এবার মহালয়া পড়েছে আগামী ১৪ অক্টোবর, ২৬ শ্রাবণ। মহাষষ্ঠী আগামী ২০ অক্টোবর, ২ কার্ত্তিক শুক্রবার, মহাসপ্তমী আগামী ২১ অক্টোবর, ৩ কার্ত্তিক শনিবার, মহাষ্টমী আগামী ২২ অক্টোবর, ৪ কার্ত্তিক রোববার, মহানবমী ২৩ অক্টোবর, ৫ কার্ত্তিক সোমবার এবং বিজয়া দশমী অনুষ্ঠিত হবে ২৪ অক্টোবর ৬ কার্ত্তিক মঙ্গলবার। এদিন প্রতিমা বির্সজনের মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। এ বছর দশভুজার আগমন ও প্রস্থান ঘটবে ঘোড়ায় চড়ে।

রাণীশংকৈল উপজেলা হিন্দু বোদ্ধ খ্রিষ্টান ঔক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আসন্ন শারদীয় দুর্গা পূজা সম্পর্কে বলেন, প্রতিবছর এ উপজেলায় ৫৪টি মন্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা পালন করা হয়, এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না বলে আশা করছি। 

রাণীশংকৈল উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাধন বসাক জানান, চলতি বছরে উপজেলায় সর্বজনীন ভাবে ৫৪টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এবারো প্রতিটি মন্দিরে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সৌহার্দ্য ও সম্প্রতির মধ্যদিয়ে দূর্গোৎসব পালনের জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

রাণীশংকৈল থানা অফিসার ইনচার্জ গুলফামুল ইসলাম মন্ডল জানান, আসন্ন শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ পূজা উদযাপনের জন্য, পূজা উদযাপন কমিটি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিটিং করা হবে। আর শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা ও নিবির পর্যবেক্ষণ এবং মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –