• রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৭ ১৪৩১

  • || ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পুলিশকে জনবান্ধব করে বিদায় নিলেন এসপি জাহাঙ্গীর আলম

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২৩  

 
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম যোগদানের পর থেকেই জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিবর্তন হতে শুরু করে। পুলিশ জনবান্ধব তা প্রমাণ করেছেন এই কর্মকর্তা।

মানবিক এসপি হিসেবেও তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন জেলাবাসী। তার নানামুখী জন ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগের জন্য তাকে চিত্তে ধারণ করবে ঠাকুরগাঁওয়ের সেবাগ্রহিতা সব মানুষ।

স্থানীয়রা এই পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে বলেন, মাদকের জন্য যুবসমাজ হুমকির মুখে পড়েছিল। পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম যোগদানের পর থেকে শক্ত হাতে তা প্রতিরোধ করেছেন। তার নেতৃত্বে ও নির্দেশে মাদকের অভয়ারণ্য সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো এখন আলোর দেখা পেয়েছে। স্থানীয়দের চাওয়া এমন এসপি চলে গেলেও যেন মাদকের সয়লাব হতে এসব উপজেলাগুলো রক্ষা পায়। আবার যেন মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি না পায়।

শুধু মাদক নয়, পুলিশ সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রেও সাধারণ জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তিনি পথে ঘাটে সচেতনতার ক্যাম্পেইন করে জানান দিয়েছেন যোগ্যতায় চাকরি হয়। এ সময় তার এই মহৎ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলাবাসী। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ও জনসমাগম স্থানগুলোতে প্রজেক্টরের মাধ্যমে কীভাবে চাকরির আবেদন করতে হবে? দালাল থেকে কীভাবে নিজেকে ও নিজের অর্থকে নিরাপত্তা দিতে হবে এসবই ছিল ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য।

সাধারণ মানুষও যেকোনো প্রয়োজনে আইনি পরামর্শ ও নানা রকম অসুবিধার কথা অকপটে বলা যেতের পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আমার চাকরি জীবনে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের মতো অফিসার দেখিনি৷ ক্রীড়ামোদী, সঙ্গীতপ্রেমী এবং জনবান্ধব। পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তার নানাবিধ চর্চা আমাদের সকলকে মুগ্ধ করেছে। ভালোবাসা দিয়ে পুলিশের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও যে কিছু অপরাধীকে ভালো পথে ফেরানো যায়, পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে ভালো কাজ করিয়ে নেওয়া যায় তিনি তা প্রমাণ করেছেন। আমি তাকে আদর্শ হিসেবে বাকি চাকরি জীবন পরিচালিত করবো।

২৯ ডিসেম্বর ২০২০ সালে তিনি এসপি হিসেবে যোগদানের পর পাল্টে যায় পুলিশের সেবার ধরন। বদলে গেছে পুলিশের আচরণ। এখন পুলিশ সাধারণ মানুষের কথা মন দিয়ে শোনে। হয়রানি কমে গেছে। মামলা করতে পয়সা লাগে না। থানার প্রধান ফটকগুলোতে ইতিপূর্বে জিডি, অভিযোগ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, পাসপোর্ট ভিআর, চাকরির ভিআরসহ যেকোনো পুলিশি সেবা গ্রহণ করতে টাকা লাগে না এমন লেখা ব্যানার, ফেস্টুন ঝুলানো আছে। ফলে থানায় দালাল ও ঘুষের দৌরাত্ম্য নেই। জেলাবাসীর প্রত্যাশা তিনি চলে গেলেও এই পরিবেশ যেন বেঁচে থাকে।

কিছুদিন আগে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের বদলির কাগজ এসেছে। সরকারি চাকরিতে এটি একটি চলমান পক্রিয়া জেনেও যেন জেলাবাসীর কোথাও দাগ কেটেছে এ খবর। এসপি জাহাঙ্গীর আলম আরও কিছুদিন থাকলে ভালো হতো এমনও আলোচনা শোনা গেছে শহরের অলি-গলিতে, চায়ের দোকানের আড্ডায় আলাপচারিতায়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঠাকুরগাঁও আমার মনে থাকবে। এ জেলার সহজ সরল মানুষগুলোকে আমি মনে রাখবো। কতটুকু জনবান্ধব পুলিশ অফিসার হতে পেরেছি জানি না। তবে নিজের কাছে ভালো লাগছে এমন একটি জেলায় কাজ করতে পেরে। পুলিশকে জনবান্ধব, হয়রানিমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করেছি। মানুষের প্রথম ভরসার স্থল হবে থানা। জেলার থানাগুলোকে সেভাবে গোছানোর চেষ্টা করেছি। শুধু বলবো পুলিশ ও জনগণ বন্ধু। মিলেমিশে কাজ করলে সমাজকে সুন্দর করে গড়ে তোলা সম্ভব।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –