• রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৭ ১৪৩১

  • || ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বলাকা সিনেমা হল‌ এখন ডায়াগনস্টিক সেন্টার

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২৩  

 
ঠাকুরগাঁওয়ের এক সময়ের রমরমা বলাকা সিনেমা হল‌টি এখন ডায়াগনস্টিক সেন্টার। বাংলা সিনেমার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে কমেছে সিনেমা হলের সংখ্যা। বর্তমানে হল বিমুখ মানুষ টেলিভিশিন-কম্পিউটারসহ নানা মাধ্যমে খুঁজে নিচ্ছে নিজেদের পছন্দের বি‌নোদন আর সিনেমা।

একটা সময় ছিল সদ্য মুক্তি পাওয়া নতুন বাংলা ছবি দেখতে মানুষ ছুটে যেত সিনেমা হলে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দল বেধে বাংলা ছবি দেখা বিনোদনের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

সি‌নেমার সেই সোনালী দি‌নের স্মৃ‌তিচারণ কর‌তে গি‌য়ে সদর উপজেলার আবুল কালাম বলেন, সেই ছোট‌বেলা থে‌কে ঈদ আসলে আমরা সবাই মিলে সিনেমা দেখতে যেতাম কর্ণফুলী, বলাকা, আলিয়া ও মৌসুমি সিনেমা হলে। বেদের মেয়ে জোসনা, খায়রুন সুন্দরী, কমলার বনবাস, কাসেম মালার প্রেম, ঝিনুক মালা, রাখাল বন্ধু, গরীবের সংসার, ভাত দে- এইসব ছবি দেখতে ছুটে যেতাম সিনেমা হলে। হল বন্ধ থাকায় এখন আর দেখা হয় না।

এক সময়ের রমরমা সিনেমা হলের অনেকগুলোই এখন ব্যবহৃত হচ্ছে স্কুল ভবন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠতেছে। আবার সেই সব সিনেমা হলের সামনে সিনেমার পোস্টারের বদলে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণার ব্যানার-ফেস্টুন ঝুলতেও দেখা যায়।

ঠাকুরগাঁও সদরের বলাকা সিনেমা হলের একাংশ এখন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরিণত হয়েছে। বাকি অংশে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। জেলার সবচেয়ে বড় সিনেমা হল বলাকা সিনেপ্লেক্সের সামনের দেয়ালে সিনেমার পোস্টারের বদলে ঝুলছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ব্যানার।

জেলার শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী বলেন, ৮০ দশকে মানুষ সিনেমা হলসহ সিডি-ভিসিআরে সিনেমা দেখতেন। শুক্রবার এলে বিকেল তিনটার সময় কাজকর্ম গুছিয়ে সাদাকালো টিভিতে বিটিভির প্রচারকৃত সিনেমা দেখতে বসে পরতেন। এখন আর এসব দৃশ্য চোখে পড়ে না।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চেয়ারম্যান অরুণাংশ দত্ত টিটু বলেন, সিনেমা হল আর সাদাকালো টিভি একসময় খুব চলতো, এখন আর চোখে পড়ে না। এখন স্মার্টফোন আর ডিশ লাইনের মাধ্যমে সারা বিশ্বের খবর ও বিনোদন ঘরে বসে দেখতে পায় মানুষ।

এ বিষয়ে সিনেমা হলটির প‌রিচালনায় দা‌য়ি‌ত্বে থাকা মির্জা ফয়সাল আমিন বলেন, গত ৩০ বছর আগেই  সিনেমা হলটি এক ব‌্যক্তির কা‌ছে ভাড়া দেওয়া হয়। পরে যাদেরকে ভাড়া দিয়েছিলাম তারা গত কয়েক বছর ধরে হল বন্ধ রাখছেন। এতে আমাদের এই সিনেমা হল দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। অবশেষে আমরা বাধ্য হয়ে এটাকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বানাচ্ছি।

এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক মাহবুবর রহমান বলেন, আমরা চাই আবারো সিনেমা হলগুলো চালু হোক। চালু করতে গিয়ে যদি সিনেমা হল মালিকদের ঋণের প্রয়োজন হয় তা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে। সিনেমা হলগুলো চালু হলে সুস্থ সংস্কৃতি ফিরে আসবে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –