প্রথমবারের মত ইউরোপে রফতানি হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের আম

 
দেশের গন্ডি পেরিয়ে প্রথমবারের মত ইউরোপে রফতানি হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের আম। বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের লাভের পাশাপাশি সমৃদ্ধ হবে জেলার ও দেশের অর্থনীতি। দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। জেলায় ধান, গম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রকম সবজি ও ফল উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত পণ্য জেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আগে আলু, করলাসহ কয়েকটি পণ্য রফতানি হলেও ফল রফতানি হয়নি। এবারই প্রথম আম্রপালি, বানানা ম্যাংগো ও বারি আম-৪ জাতের ৫০০ কেজি আম ইংল্যান্ডে রফতানি হতে যাচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার আম বাগানি পলাশ চন্দ্রের বাগান পরিদর্শন করেন রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। পরে সে বাগান থেকে নেওয়া তিনটি জাতের ৫০০ কেজি আম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে বিদেশে আম রফতানির সূচনা হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় ৭৯৫০ একর জমিতে ৪২০১টি বাগানে ২২টি জাতের আম আবাদ করা হয়েছে। যার মধ্যে এবারে ৫০ থেকে ১০০ মেট্রিক টন আম রফতানির লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে।

মানসম্মত আম উৎপাদন, ন্যায্য দাম ও রফতানিকারকদের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে এ জেলা থেকে আগামীতে বিপুল পরিমাণ আম রফতানি হবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের।

নিজের বাগানের উৎপাদিত আম ইউরোপে রফতানি করতে পেরে খুশি বাগান মালিকেরা। বাগান মালিক পলাশ চন্দ্র বলেন, আমার বাগানের আম বিদেশে পাঠাতে পেরে আমি অনেক গর্বিত। এই জেলার আম অনেক সুস্বাদু। আম রফতানি হলে জেলায় আম চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।

রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড লিংক এর সিইও কাওসার আহমেদ রুবেল বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন বাগান প্রদর্শন করে এখানকার আম রফতানি উপযোগী বলে আমরা মনে করি। এবারই প্রথম এই জেলা থেকে আম রফতানি করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি আম চাষিরা আমাদেরকে গুণগত মানসম্পন্ন আম সরবরাহ করবে। তাহলে বিদেশে আমাদের আমের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, সেই সঙ্গে আমের বাজার আরও প্রসারিত হবে।

রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আরিফুর রহমান বলেন, গত বছরের চেয়ে এবারে দ্বিগুণ আম রফতানি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ বছর প্রকল্পের শুরু হল, আর এবার ঠাকুরগাঁওয়ের আম ইউরোপের বাজারে যাবে। এর মাধ্যমে বাগান মালিকদের পাশাপাশি এ শিল্পে যারা আছেন তারা সকলে লাভবান হবে বলে আশা করছি।

ঠাকুরগাও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, শুভক্ষণের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপে আম প্রেরণ করা হচ্ছে। আর ক্রমান্বয়ে জেলায় আম বাগান বাড়ছে। রফতানির মাধ্যমে চাষিরা অধিক মূল্যের পাশাপাশি স্থানীয় শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এতে করে জেলার অর্থনীতির পরিবর্তন আসবে।

ঠাকুরগাও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, অন্যন্যা জেলায় আম যখন শেষের দিকে তখন আমাদের জেলার আম হার্ভেস্ট করা শুরু হয়। আমাদের অপার সম্ভাবনা থাকা সত্বেও এবারে প্রথম বিদেশে রফতানির সুযোগ হল। আগামীতে এটি আরও বেড়ে মানসম্মত আম রফতানির পথকে সুগম করবে। সেই সাথে রফতানি উপযোগী আম উৎপাদনে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।