• রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৭ ১৪৩১

  • || ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ উপহার দেন জাহিদ

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ জুন ২০২৩  

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ২৫ ভাগ বনভূমির প্রয়োজন। বনভূমি বিস্তারে দরকার বেশি করে বৃক্ষ রোপণ। বনায়ন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে দীর্ঘদিন থেকে গাছ রোপণ এবং বিতরণ করে আসছেন জাহিদ ইকবাল। 

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার আশ্রমপাড়া বাসিন্দা জাহিদ ইকবাল। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। রোববার থেকে বুধবার সারাদিনের কর্মব্যস্ততা কোর্ট চত্বরকে ঘিরে। তবে প্রতি বৃহস্পতিবার কোর্টের কাজ শেষ করে মানুষের হাতে গাছ উপহার হিসেবে তুলে দেন তিনি। আর শুক্রবার ও শনিবার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে রোপণ করেন গাছ। আর সময় পেলেই পরিচর্যা করেন রোপণকৃত গাছগুলো।

তবে এমনি গাছ উপহার পাওয়ার সুযোগ নেই। মানতে হবে কয়েকটি শর্ত। একটি গাছ উপহার নিলে সঙ্গে নিজ অর্থায়নে রোপণ করতে হবে আরো তিনটি গাছ। রোপণের পর করতে হবে গাছের পরিচর্যা।

জানা যায়, অ্যাডভোকেট জাহিদ ইকবাল ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি, স্নাতক এবং রংপুর আইন কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন। গত ১৫ বছর ধরে তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা জজ কোর্টে আইন পেশায় আছেন। আইনজীবী হলেও গাছের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে উঠেছে। গাছকে ভালোবাসেন তিনি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রোপণের পাশাপাশি বিতরণ করেন গাছ। 

তার কাছ থেকে গাছ পাওয়া আরমান হোসেন বলেন, জাহিদ ইকবাল আমাকে দুইটি গাছ উপহার দিয়েছেন। সে গাছগুলোর পরিচর্যা সম্পর্কে প্রায় তিনি খবর নেন। এ উদ্যোগ আমাদের পরিবেশকে সবুজে ভরপুর করবে বলে আশা করছি।

বৃক্ষপ্রেমী অ্যাডভোকেট জাহিদ ইকবাল বলেন, বনভূমি কমে যাওয়ার জন্য আমরা প্রকৃতিকে দায়ী করি। কিন্তু প্রকৃতি যতটা না দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী আমরা। নিজেদের প্রয়োজনে আমরা নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলছি। কৃষিজমি লাগবে, বাড়িঘর বানাতে হবে, আসবাবপত্র বানাতে হবে, খেলার মাঠ বানাতে হবে- এজন্য আমরা গাছ কেটে ফেলছি। এসব কাজ করতে গিয়ে আমরা উপকারের চেয়ে সর্বনাশ বেশি ডেকে আনছি। প্রয়োজনে আমরা গাছ কাটব। কিন্তু গাছ কাটার পর নতুন করে গাছ না লাগানোর কারণে কত প্রজাতির গাছ যে এখন ধ্বংসের মুখে তার কোনো হিসাব নেই। এছাড়া গাছ পাখিদের আশ্রয়স্থল। গাছ উজাড় হওয়ায় নানা প্রজাতির পাখিও বিলুপ্ত হচ্ছে। 

তিনি আরো বলেন, মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে এবং গাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। গাছ রোপণ আসলে অনেক ভালো কাজ। একটি গাছ থেকে নানাভাবে মানুষ ও পশুপাখি উপকৃত হয়। সেজন্য প্রতি বৃহস্পতিবার কোর্ট শেষ করে মানুষের মাঝে গাছ উপহার হিসেবে দিচ্ছি। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে গাছ রোপণ করেছি। এতে ভালো কাজের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে গাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।

তার এ কাজকে সাধুবাদ জানিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি আসলেই প্রশংসনীয় কাজ। আমরা এখন গাছ রোপণ না করে নিধন করছি। তবে এবারের বর্ষায় আমরা উদ্যোগ নিয়েছি বেশি বেশি গাছ রোপণের। আর সব শিক্ষার্থীকে এবার সর্বনিম্ন একটি হলেও গাছ লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হবে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –