• সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৮ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঠাকুরগাঁওয়ে বিরল প্রজাতির ‘রেড কোরাল কুকরি’ উদ্ধার 

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ভুল্লী বড় বালিয়া থেকে প্রথম বারের মত জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বিরল প্রজাতির ‘রেড কোরাল কুকরি’ সাপ। গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সদর উপজেলার বড় বালিয়া এলাকার জয়নাল নামে এক ব্যক্তি রাস্তা থেকে উদ্ধার করেন সাপটি। বন‌্য প্রাণী সংরক্ষক ও উদ্ধারকারী সহিদুল ইসলাম (বিএসএস) ঘটনার সত‌্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়রা সাপটিকে দেখতে পেয়ে না মেরে আটক করেন এবং আমাকে খবর দেন। আগামীকাল সেখানে গিয়ে সাপটিকে উদ্ধার করবো। এরই মধ্যে এই সাপটি বাংলাদেশে রেকর্ডসহ আন্তর্জাতিক গবেষণা পত্রে প্রকাশ পেয়েছে। মানুষ এখন মোটামুটি ভাবে সচেতন হয়েছেন। সাপ দেখলে না মেরে উদ্ধারকারীকে ফোন দিচ্ছেন তারা।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেরা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, সাপ উদ্ধারের খবরটি শুনেছি। বিরল প্রজাতির সাপটি সংরক্ষণের জন্য বন্য ও প্রাণী অধিদফতরকে দ্রুত বার্তা পাঠানো হবে।

এর আগে, পুরো পৃথিবীতে মাত্র ২০-২২ বার এ সাপের দেখা মিলেছে বলে জানা গেছে। গত বছর পাঁচ বার দেখে মিলেছে এ সাপের। পাঁচ বারেই দেখা মিলেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি একই এলাকা থেকে আহত অবস্থায় পঞ্চগড় তথা বাংলাদেশে মধ্যে প্রথম বারের মত উদ্ধার হয় এই সাপ। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার চাকলাহাট এলাকা থেকে দ্বিতীয় বারের মত মৃত অবস্থায়, ২০ এপ্রিল টুনিরহাট এলাকা থেকে তৃতীয় বারের মত জীবিত এবং ১০ মে একই এলাকা থেকে চতুর্থ বারের মত মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়।

উল্লেখ‌্য, রেড কোরাল কুকরি বিরল প্রজাতির একটি সাপ। উজ্জ্বল কমলা ও প্রবাল লাল বর্ণের এই প্রজাতিটির বৈজ্ঞানিক নাম ওলিগোডন খেরেনসিস (Oligodon Kheriennsis)। ১৯৩৬ সালে উত্তর প্রদেশের খেরি বিভাগের উত্তরাঞ্চল থেকে এই সাপ আবিষ্কৃত হয়। উজ্জ্বল কমলা ও লাল প্রবাল বর্ণের এই সাপটি অত্যন্ত মোহনীয়। লাল প্রবাল সাপটি মৃদু বিষধারী ও অত্যন্ত নিরীহ। এই সাপটি পৃথিবীর দুর্লভ সাপদের একটি। পৃথিবীতে হিমালয়ের পাদদেশের দক্ষিণে ৫৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার এলাকায় এটি দেখা যায়। সাপটি নিশাচর এবং বেশির ভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। সম্ভবত মাটির নিচে কেঁচো ও লার্ভা পিপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবন ধারণ করে। নরম মাটি পেলে মাটি খুঁড়ে ভেতরে চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। মাটির ভেতরে থাকার জন্য রোসট্রাল স্কেল ব্যবহার করে সাপটি। রোসট্রাল স্কেল হল সাপের মুখের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত অঙ্গবিশেষ যার সাহায্যে মাটি খনন করে। এ সাপটি পূর্ণ বিষধর হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –