• শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৫ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে ব্যালন ডি`অর!

স্পোর্টস ডেস্ক

দৈনিক ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৮  

এ বছরের ব্যালন ডি'অর অ্যাওয়ার্ডের ভোটিং প্রায় শেষের পথে। দু’টি বিশ্বস্ত সুত্র স্পোর্টস বাইবেল এবং রেডিও ফ্রান্স থেকে পাওয়া বড় খবর হলো, ভোটিং এর টপ ৩ এ মেসি ও রোনালদো দু’জনের একজনও নেই!রেডিও ফ্রান্সের খবর অনু্যায়ী, টপ তিনের শীর্ষে রয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ, তার পরে আছেন রিয়ালেরই রাফায়েল ভারান ও পিএসজির কিলিয়ান এমবাপ্পে।

লুকা মদ্রিচকে ইদানীং না জানি কি কারণে বারবার ফেবারিট ফুটবলারের তকমা দেয়া হচ্ছে। এটি শুরু হয়েছিলো বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে করা তার অসাধারণ গোলটির পর থেকেই। তারপর থেকেই মদ্রিচ গোল্ডেন বল যেতার শক্ত দাবিদার। কিন্তু তাই বলে এই না যে তাকে গোল্ডেন বল দেয়ার পাশাপাশি সেরা ফিফা খেলোয়াড় কিংবা ব্যালন ডি'অর দেয়া উচিত। মদ্রিচ না আছেন সেরা গোলদাতা তালিকার শীর্ষে না আছেন সেরা এসিস্ট তালিকার শীর্ষে। অযুহাত দেয়া যেতে পারে, মদ্রিচ একজন মিডফিল্ডার, স্ট্রাইকার না। মিডফিল্ডার সাধারণত সেরা গোলদাতা তালিকার শীর্ষে থাকে না। কিন্তু মদ্রিচ বল পাসিং একুরেসিতেও শীর্ষে নেই, এমনকি তার খুব একটা নেই গুরুত্বপূর্ণ পাসও।

মদ্রিচ একজন প্লে মেকার। অন্যদিকে লিওনেল মেসি ইদানীং ফরওয়ার্ডে খেলার পাশাপাশি মাঝমাঠের দিকেও খেলেন। দু’জনের প্লেমেকিং দক্ষতা তুলনা করলে অবশ্যই মেসি অনেক এগিয়ে থাকবে। হ্যাঁ, হতে পারে মদ্রিচ বিশ্বকাপে সবাইকে ছাপিয়ে অসাধারণ পারফরমেন্স দেখিয়েছেন। কিন্তু ব্যালন ডি'অর শুধু এক টুর্নামেন্ট এর অ্যাওয়ার্ড না। এটি পুরো মৌসুমের খেলা বিবচনা করে দেয়া হয়ে থাকে এবং মৌসুমের সবচেয়ে সেরা খেলোয়াড়ই এই পুরষ্কারে সম্মানিত হন। সেজন্য নতুন মৌসুম শুরু হওয়ার পাশাপাশি আপনাকে আপনার সেরা ছন্দে থাকতে হবে। কিন্তু এই মৌসুমে লুকা মদ্রিচের পারফর্ম্যান্সের বিবেচনা করলে তাকে খুঁজেই পাওয়া যাবে না। এই মৌসুমে লুকা মদ্রিচ নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন, ঠিকমত হচ্ছে না পাসিং, হচ্ছে না মাঝমাঠ দখল।

আপনি নিজেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, এই মুহুর্তে কি লুকা মদ্রিচ সেরা মিডফিল্ডার? অবশ্যই না। এই মৌসুমে এলেক্স উইটসেল, বারনার্দো সিলভা, আরথার মেলোরা তাকে ছাপিয়ে অনেক দূরে চলে গেছে। এই ধরণের ভোটিং এর জন্যই বিশেষায়িত বিশেষজ্ঞদের ভোটিং মনিটরিং এর বিষয়ে প্রশ্ন তোলে। যেখানে লিও মেসি, সি আর সেভেন এর ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের মূল্যায়ন হতো সেটা কি আদৌ হচ্ছে? গত বছর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ৫ টি ট্রফি জেতেন। শুধু তাই নয় তিনি ছিলেন সেরা গোলদাতা ও সেরা এসিস্ট করা খেলোয়াড়। রোনালদো কি গতবছর ব্যালন ডি'ওরের দাবিদার ছিলেন না?

এই মৌসুমে লিওনেল মেসি রোনালদোর সমান গোল করেন আর এসিস্টে তার চেয়েও এগিয়ে। নিশ্চিতভাবে মেসি অন্যসব দাবিদার থেকে এগিয়ে। পাসিং থেকে শ্যুটিং, গুরুত্বপূর্ণ পাস থেকে বল দখল সব কিছুতেই মেসি অনন্য। তবে কি মেসি ব্যালন ডি'অর জেতার দাবি রাখে না? তাহলে কি বিশ্বকাপের পর যে খেলোয়াড়টি ৩ মাসের পারফর্ম্যান্স বিচার করলে কিছুই পাওয়া যাবে না সে-ই কি আবার ব্যালন ডি'অর জিততে যাচ্ছে? আর রাফায়েল ভারান এই লিস্টে কেনো? এর কারণ কি ভারান বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্স দল আর উইয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ী রিয়াল মাদ্রিদ এর দলের অংশ ছিলেন এজন্যই? ভারানের পারফর্ম্যান্স কি খুব ধারাবাহিক? এবারের লীগে রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণভাগ তাদের ভালো ফলও এনে দিতে পারেনি। এরকম হিসেব করলে এ বছরে ভারানের চেয়ে স্যামুয়েল উমতিতি ভালো খেলেছেন আর বিশ্বকাপজয়ী দলেরও সদস্য।

ভারানের এই মৌসুমে গড়যাচ রেটিং পয়েন্ট হলো ৬ দশমিক ৬৭ যা কুলিবালি কিংবা ভ্যান ডি জিক এর চেয়েও কম। সেটিও তাদের চেয়ে কম ম্যাচ খেলে। এসব একমাত্র এমবাপ্পেই এই তালিকায় যোগ্য ফুটবলার। ফ্রেঞ্চ ফুটবল একটি পোল খোলে যেটিতে জানতে চাওয়া হয়েছিলো কার হাতে এবার ব্যালন ডি'অর উঠবে বলে সবাই মনে করেন। সেখানে মেসি ৫৭ শতাংশ ভোট পান। সেই পোলটি তারা ডিলেট করে পরবর্তীতে সেই পোলের লিংক মেসির ট্যাক্স ফাঁকি মামলার লিংকের সঙ্গে বদলে দেয় যেটি অনেক আগেই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এর আগেও কয়েকবার ব্যালন ডি'অর নিয়ে বিতর্ক হয়েছিলো। কিন্তু এইবারের টা একদমই গ্রহণযোগ্য হবে না। আর এভাবেই ধীরে ধীরে কিন্তু নিশ্চিতভাবে ব্যক্তিগত পুরষ্কারগুলো দিন দিন মূল্য হারাচ্ছে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –