• বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৪ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাইনোসাইটিস কী এবং এর প্রতিকার

দৈনিক ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০১৮  

সাইনোসাইটিস বেশ পরিচিত একটি শব্দ।প্রচণ্ড মাথাব্যথা, দাঁতব্যথা, মাথা ভারী মনে হওয়া- এসবই সাইনোসাইটিসের লক্ষণ।সাইনাসে ইনফেকশন হলে এই সমস্যা দেখা যায়।কিন্তু এই সাইনাস কী? মুখমণ্ডলের হাড়ের ভেতরে কিছু বায়ুগহ্বর আছে।এরা আবার এসে মিলেছে নাকের গহ্বরের সঙ্গে।এই বায়ুগহ্বরগুলোকেই বলে সাইনাস।এমন সাইনাস সংখ্যা আটটি অর্থ্যাৎ চার জোড়া।কপালে দুই জোড়া, ভ্রু’র মাঝামাঝি একটুখানি ওপরে আছে এক জোড়া ফ্রন্টাল সাইনাস।জোড়া এথময়েড সাইনাস থাকে চোখের একটুখানি নিচে, নাকের দুই পাশে।নাকের দুই পাশে আরেকটু ভেতরের দিকের গালে, চোয়ালের হাড়ের পেছনে থাকে এক জোড়া ম্যাক্সিলারি সাইনাস আর সর্বশেষ একজোড়া স্ফিনয়েড সাইনাস থাকে দুই চোখের পেছনে।

 

1.সাইনোসাইটিস কী এবং এর প্রতিকার

এই সাইনাসগুলো ঘিরে এক বিশেষ কোষ থাকে।এদের কাজ পাতলা একধরণের পিচ্ছিল জেলীর মতো তরল পদার্থ ক্ষরণ করা।একে মিউকাস (Mucus) বলে। নাসারন্ধ্রের মাঝে মিউকাসের একটা পিচ্ছিল আবরণ থাকে।সাইনাস এর আসল কাজ কী এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। কিন্তু সাইনাস বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। যেমন- নিঃশ্বাসের সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস টেনে নিলে সেটা ফুসফুসে যাওয়ার আগেই সাইনাস সেটাকে একটু উষ্ণ ও আর্দ্র করে তোলে, যাতে ফুসফুসের সমস্যা না হয়। মাথার খুলির হাড়ের যে ভার, সাইনাসের কারণে সেটা একটুখানি হালকা হয়ে যায় (এটার একটা ভালো উদাহরণ পাখির হাড়ের মাঝে থাকা বায়ুগহ্বর, যে কারণে পাখি হালকা হয়, ফলে উড়তে পারে)। সাইনাস না থেকে ওই জায়গাটুকুও হাড় দিয়ে ভরাট হয়ে গেলে মাথার ভার বহন করতে আমাদের বেশ ঝামেলা হতো।

 

2.সাইনোসাইটিস কী এবং এর প্রতিকার

ঠান্ডা লাগলে কিংবা কোনো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে সাইনাসের মিউকাস ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে মিউকাসের যে আবরণ নাসারন্ধ্রকে ঘিরে আছে তা আয়তনে বৃদ্ধি পায়। অধিক মিউকাস ক্ষরণের ফলে সাইনাসের মধ্য দিয়ে বাতাস চলাচলের খোলা জায়গাটি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থাকেই বলে সাইনোসাইটিস। সাইনোসাইটিস এর জন্য মাথা ভার হয়ে যাওয়া, মাথাব্যথা, দাঁত ব্যথা ছাড়াও গলার স্বর ভেঙ্গে যেতে পারে।স্থায়ীত্বের উপর ভিত্তি করে সাইনোসাইটিস দুই রকমের হতে পারে। চার-আট সপ্তাহের মাঝে ভালো হয়ে গেলে একে বলে অ্যাকিউট সাইনোসাইটিস এবং এটি আট সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে একে বলে ক্রনিক সাইনোসাইটিস।

 

3.সাইনোসাইটিস কী এবং এর প্রতিকার

প্রথম অবস্থায় এ রোগ ধরা বেশ কষ্টকর। সাইনোসাইটিস নির্ণয়ের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিভিন্ন পদ্ধতির সহায়তা নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।যেমন-সিটিস্ক্যান, নেসাল এন্ডোসকপি, নাকের মাংসের বায়োপসি, সানুসকপি, সুইয়েটকোরাইড টেস্ট।সাইনোসাইটিসের সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। এছাড়া ধুলাবালি এড়িয়ে চলতে হবে। ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। দাঁতের ক্ষয় এবং অন্যান্য রোগের চিকিৎসা করাতে হবে। ব্যথা থাকলে ব্যথানাশক ওষুধ (প্যারাসিটামল) খাওয়া যেতে পারে। ওষুধে ভালো না হলে, সাইনাস ওয়াশ করতে হবে। অনেকের ভুল ধারণা আছে, একবার সাইনাস ওয়াশ করলে বারবার করতে হয়, ধারণাটি ঠিক নয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত সাইনোসাইটিস ওয়াশ করে উপযুক্ত মাত্রা এবং নিয়মে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে রোগী সম্পূর্ণ ভালো হয়।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –