• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রেম নিয়ে দ্বন্দ্ব: ‘বিশেষ অঙ্গ’ কেটে ফেলা সেই বেলালের মৃত্যু

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২৪  

এক মেয়ের প্রেমেই মজেছিলেন দুই বন্ধু। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই জেরে বেলাল হোসেন তার বন্ধু সিরাজুল ইসলামের ‘বিশেষ অঙ্গ’ ব্লেড দিয়ে কেটে দেন। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত বেলাল হোসেনকেও ‘বিশেষ অঙ্গ’, শ্বাসনালী ও পেট কাটা অবস্থায় পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। বুধবার (১৯ জুন) বিকেলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলাল হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কামালের পাড়া ইউনিয়নের সুজালপুর গ্রামে।

নিহত বেলাল হোসেন সুজালপুর গ্রামের মফিজল হকের ছেলে এবং সিরাজুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী ঘুরিদহ ইউনিয়নের পবনতাইড় গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে।এ ঘটনায় সন্ধ্যায় সিরাজুলের বাবা বাদী হয়ে সাঘাটা থানায় মামলা করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাঘাটা থানার ওসি মততাজুল হক।

কামালের পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর ইসলাম সাজু বলেন, এক মেয়ে নিয়ে দুই বন্ধুর সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। মেয়েটি বেলালের আত্মীয়। বেলাল জানতে পারে, ওই মেয়ের সঙ্গে সিরাজুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বেলাল ঈদের পর দিন বন্ধু সিরাজুলকে বাড়িতে ঈদের দাওয়াত দিয়ে ডেকে নেয়। তারপর ঘরে নিয়ে সিরাজুলের ‘বিশেষ অঙ্গ’ ব্লেড দিয়ে কেটে দেন। এ সময় ধ্বস্তাধস্তিতে সিরাজুলের ডান হাতের দুই জায়গায় মারাত্মক জখম হয়। সিরাজুলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বেলাল হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। একইদিন বিকেলে কামালের পাড়া ইউনিয়নের পাটক্ষেতে বেলালকে গলার শ্বাসনালী, পেট ও ‘বিশেষ অঙ্গ’ কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তাকেও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।

ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম বলেন, বেলাল আমার ভাইয়ের মতো। একসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলাফেরা করি। আমাকে ঈদের পর দিন দাওয়াত দিয়ে বাড়িতে ডেকে নেয়। ঘরের ভেতর জোর করে আমার ‘বিশেষ অঙ্গ’কেটে দেয়।

এ সময় বেলালের সঙ্গে আর কেউ ছিল কি-না, আর কী কারণে এ কাজ করল- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে বেলালের খালাত বোনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বেলালও তাকে পছন্দ করত। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে বেলাল এই কাজ করেছে। জোর করে একজন ব্যক্তি একাই কীভাবে আপনার‘বিশেষ অঙ্গ’ কাটতে পারল— এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি সিরাজুল। তাছাড়া বেলালকে কে বা কারা এভাবে রক্তাক্ত করে মাঠে ফেলে রেখে গেল তার বিষয়ে পুলিশ বা স্থানীয়রা কিছু বলতে পারেননি।

সাঘাটা থানার ওসি মততাজুল হক বলেন, এ ঘটনার পর একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে বগুড়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলাল হোসেন মারা গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, এভাবে একজন আরেকজনের ‘বিশেষ অঙ্গ’কেটে দেওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক। তাদের দুই বন্ধুর মধ্যে মেয়েলি ঘটনা ছাড়াও সমকামিতা থাকতে পারে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া বেলালকে কে বা কারা এভাবে রক্তাক্ত করল সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –